নিজেদের খাবার সমস্যা থাকলে ও গবাদি প্রাণীর খাবার নিয়েও বিপাকে পড়েছে।
গতকাল রোববার সন্ধ্যার পর থেকে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পাওয়ায় উপজেলার লক্ষীটারী ইউনিয়নের বাগেরহাট, ইচলির চর, শংকর দহচর, কোলকোন্দ ইউনিয়নের পূর্ব বিনবিনা, নোহালীর চরের প্রায় এক হাজার পরিবার পানি বন্দি হয়ে পড়ে। পানি বন্দি পরিবারগুলো রাতে কেউ ঘুমাতে ও রান্না করে খেতে পারে নাই।
এসব পরিবার গবাদি প্রাণী ও বাড়ির প্রয়োজনীয় আসবাবপত্র অন্যত্র সরিয়ে নেয়। নিজেদের খাবার সমস্যা থাকলে ও গবাদি প্রাণীর খাবার নিয়েও বিপাকে পড়েছে। বিশুদ্ধ পানি ও প্রশাব পায়খানায় তাদের চরম ভোগান্তি হচ্ছে। এছাড়া চাষকৃত বিভিন্ন ফসল তলিয়ে গেছে। শিশু ও বয়স্ক ব্যক্তিদের নিয়েও বিপাকে পড়েছে।
বিজ্ঞাপন
সোমবার সকালে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, বাড়ি ঘরেও পানি রয়েছে। মানুষজন পানির মধ্যে জিনিসপত্র সরাচ্ছে ও চলাচল করছে। ইউপি সদস্য মনোয়ারুল ইসলাম জানান, তার পূর্ব বিনবিনার এলাকার বসবাস প্রায় আড়াই শতাধিক পরিবার পানি বন্দি হয়েছে। পশ্চিম ইচলির বাসিন্দা মহসিন, রেয়াজুল, সাদ্দাম, নজরুল, বাগেরহাটের রোজিনা, শাহিনা জানান, রোববার সন্ধ্যার সময় বাড়ি ঘরেও পানি ঢুকেছে পানি দ্রুত বৃদ্ধি পাওয়ায় আসবাবপত্র ও গরু, ছাগল, মুরগী সরাতে সরাতে অনেক জিনিসপত্র সরানোর আগেই তলিয় যায়। রাত খুব কষ্ট করে কাটাতে হয়েছে। তারা আরো জানান, চর এলাকায় তিস্তারবাঁধে আগে বেড়ি বাঁধছিল। বেড়ি বাঁধ থাকার কারণে তিস্তার পানি বৃদ্ধি পেলেও তারাতারি বাড়িতে পানি ঢুকতোনা। চার পাঁচ বছর আগে বেড়িবাঁধ ভেঙে গেলে ও তা পুনরায় নির্মাণ না করায় এখন পানি বৃদ্ধি পেলে বাড়িতে পানি উঠে। এদিকে কিছু কিছু এলাকায় তিস্তার ভাঙন দেখা দিয়েছে। তাছাড়া শেখ হাসিনা সেতু রক্ষা বাঁধের ব্লক ধসে যাচ্ছে।
রংপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী রবিউল ইসলাম জানান, গতকাল রাতে (রোববার) পানি কিছুটা বৃদ্ধি পাওয়ায় চরের কিছু এলাকা প্লাবিতহয়। এখন পানি কমতে শুরু করছে। ভাঙন রোধের বিষয়ে জানান, পানি কমলে ভাঙন রোধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বেড়ি বাঁধের বিষয়ে বলেন, পানি উন্নয়ন বোর্ডের আওতায় চর এলাকায় কোন বেড়িবাঁধ নেই।
বিজ্ঞাপন
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নাহিদ তামান্না বলেন, তিনি উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে সাথে নিয়ে সোমবার সকালে পানি বন্দি বাগেরহাট এলাকা পরিদর্শন করেন এবং পানি বন্দি ৫০ পরিবারের মাঝে শুকনো খাবার হিসেবে ১০ কেজি চাল, ১ কেজি ডাল, ১ কেজি চিড়া, ১ কেজি চিনি, ১ কেজি লবণ ও ১ লিটার তেল এর একটি করে প্যাকেট বিতরণ করছেন।
অন্যদিকে সোমবার বিকাল ৩ টায় ডালিয়া পয়েন্টে পানি বিপদ সীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও কাউনিয়া পয়েন্টে বিপদসীমা (২৮.৭৫) ৫ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। দু-পয়েন্টের মাঝখানে গঙ্গাচড়ায় পানি পরিমাপ যন্ত্র না থাকায় এখানে পানির লেভেল জানা যায়নি তবে স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও বাসিন্দাদের দাবি গঙ্গাচড়া এলাকায় তিস্তার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করে প্রবাহিত হওয়ায় এখানকার মানুষজন পানি বন্দি হয়ে পড়েছে।